বদলী নীতিমালার তোয়াক্কা নেই শিক্ষা ক্যাডারে
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৩, ১০:০৪ অপরাহ্ন | শিক্ষা
![বদলী নীতিমালার তোয়াক্কা নেই শিক্ষা ক্যাডারে](https://kingsnews24.com/assets/uploads/220431.jpg)
মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামিনা হক। চাকরিতে যোগ দেওয়ার পরে ২০০১ সালে বাংলা কলেজে বদলি হয়ে আসেন। এক টানা আট বছর একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার পরে মাত্র দুই থেকে তিন মাসের জন্য টাঙ্গাইলের সরকারি সাদত কলেজে বদলি হয়ে যান। সেটিও আবার প্রমাশন জণিত কারণে। প্রমোশন পাওয়ার পর ২০০৯ সালে আবারও ফিরে আসেন বাঙলা কলেজে। এরপর থেকে এক টানা এক যুগেরও বেশি সময় ধরে একই কলেজে চাকরি করে যাচ্ছেন এই শিক্ষিকা।
এ দিকে সরকারি চাকরিরত আইনশৃঙ্খলা ও প্রশাসনসহ অন্যান্য ক্যাডারের চাকরিতে একই প্রতিষ্ঠান ও স্থানে তিন বছরের বেশি চাকরি করার সুযোগ নেই। তাদের বদলি বাধ্যতা মূলক থাকলেও উপেক্ষীতি শিক্ষা ক্যাডারের ক্ষেত্রে। যদিও বদলি নীতিমালার ১০ ও ৪ নম্বর অনুচ্ছেদের ৮ নম্বরে বলা হয়েছে. কোনো কর্মকর্তা ৩ বছরের বেশি কর্মরত থাকতে পারবেন না। তবে কোনো প্রকল্প চলমান থাকলে সেটি শেষ করা পর্যন্ত থাকতে পারবেন। কিন্তু বাস্তবে শিক্ষক ও কর্মকর্তারা নানা ছলচাতুরি ও অভিনব উপায়ে একই পদে যুগের পর চাকরি করে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার বদলি হয়ে রাজধানী ছাড়লেও অদৃশ্যের ক্ষমতা বলে ফিরছেন স্বপদে। ফলে প্রশ্ন উঠছে শিক্ষা ক্যাডারে বদলি ও পদায়নের সমতা নিয়ে। রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি কলেজ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধিদপ্তরের এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কাজ করে যাচ্ছেন এমন দেড় ডজন শিক্ষক ও কর্মকর্তার তালিকা আছে প্রতিবেদক এর কাছে।
ঢাকার বিভিন্ন সরকারি কলেজ ও অধিদপ্তরে চেয়ার ধরে রাখতে অভিবন কায়দা বেছে নেন এই সকল কর্মকর্তা ও শিক্ষকরা।
তারা চেয়ার ধরে রাখার জন্য পদোন্নতি নেন না ঢাকার বাইরে বদলি হয়ে যাওয়ার ভয়ে। পদোন্নতির জন্য সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ডিপার্টামেন্টাল পরীক্ষাও দেন না। তথ্য ফাঁসের ভয়ে নিজেদের পরিচিত গন্ডির বাইরে তেমন কারো সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না। এমন কি সরকারি নির্দেশনা থাকার পরে ও পার্সোনাল ডাটা শিট (পিডিএস) আপডেট করেন না। বলা আছে, প্রতিষ্ঠান প্রধান পিডিএস আপডেট এপ্রুভ না করলে নিজ দায়িত্বে করে নিতে হবে। কিন্তু সেটি তারা করেন না।
আর দীর্ঘদিন একই প্রতিষ্ঠানে অবস্থানের ফলে এই সকল শিক্ষক ও কর্মকর্তারা সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। ফলে তাদের নিয়ন্ত্রণেই থাকে কলেজের পরীক্ষার আন্তঃ কমিটি, সরকারি চাকরির পরীক্ষা কমিটি। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ে বাধ্য করা ও পরীক্ষার খাতায় নাম্বরও নিয়ন্ত্রণ করেন। এমন কি প্রতিষ্ঠানের অন্য শিক্ষকরাও তটস্থ থাকেন এ সকল সিন্ডিকেটের ভয়।
তেমনই একজন ঢাকার একটি সরকারি কলেজের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান আব্দুর রশীদ (ছদ্মনাম)। বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগ দান করেও স্বাধীন মতো কাজ করার সাহস পাচ্ছেন না। জুনিয়র শিক্ষকদের সিন্ডিকেটের বাধায় থাকতে হচ্ছে হুমকির মুখে। এমন অভিজ্ঞতার বিষয়ে তিনি বলেন, বিভাগীয় সিদ্ধান্ত নিতে বাধা দেয়। পরীক্ষা প্রশ্ন প্রণয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কমিটিতে তারা থাকতে চান। মূলত টাকা আয় করার জন্য তারা সব নিয়ন্ত্রণ করেন। এমন কি ক্লাস রুটিন করতে হয় তাদের ইচ্ছে মতো। না হলে নানা সমস্যা তৈরি করেন তারা।
এ দিকে বদলির নীতিমালার অনুচ্ছেদে চার এর ৫ ধারায় বলা হয়েছে- অবসরে যাওয়ার আগের এক বছর সুবিধাজনক স্থানে বদলির জন্য আবেদন করলে পদ খালি থাকলে সরকার সেটি গ্রহণ করবে। কিন্তু চাকরি শেষ জীবনে এসেও অসুস্থ মা ও এক মাত্র মেয়ের পাশে থাকতে পারছেন না রাজবাড়ি সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান সিরাজুল ইসলাম।
চাকরি জীবনে মাদারিপুর, বরিশাল, মাগুরা,গোপালগঞ্জসহ অন্তত পাঁচ জেলায় চাকরি করেছেন। কখনো ঢাকায় আসার সুযোগ পান নি। বর্তমানে পারিবারিক কারণে জরুরি ঢাকায় বদলির জন্য বারবার আবেদন করেও ব্যর্থ হচ্ছেন এই শিক্ষক। তিনি বলেন, আমি চাকরি জীবনে পাঁচ জেলায় ঘুরেফিরে চাকরি করেছি। আমি নিজেও লিভার সিরোসিসের রোগী। ডাক্তার দেখাতে বারবার ঢাকা যেতে হয়। অনেকবার আবেদন করেছি। কিন্তু কাজ হয় নি। এখন তো আতঙ্কেও আবেদন করি না কারণ আবার কোথায় বদলি করে দেয় সেই ভয়ে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত ঢাকার সরকারি কলেজ ও বিভিন্ন দফতরের বদলির দায়িত্ব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। এরমধ্যে রয়েছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমি শিক্ষা বোর্ড (মাউশি), ডিআইএ, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, এনটিআরসিএ, এনসিটিবি, নায়েম, ব্যানবেইস, বাংলাদেশ প্রত্যয়ন পরিষদ (বিএসসি), প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ (ইইডি), কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। এছাড়াও ঢাকার বাইরের সরকারি কলেজের প্রভাষক ও অধ্যাপকদের বদলির দায়িত্ব এই প্রতিষ্ঠানের হাতে। প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তাদের বিষয় তথ্য সংগ্রহ ও সরবাহ করার দায়িত্ব উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। যে প্রতিষ্ঠানের কাজ তিন বছর পর শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বদলি করা। সেই প্রতিষ্ঠানেই একই পদে যুগের পর যুগ চাকরি করে যাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে ডিআইএর প্রধান কাজ স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর বা সংস্থায় পরিদর্শন এবং নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা। পরিদর্শন শেষে প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা তুলে ধরা হয়। সেই সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়। এসবের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু সেই ডিআইএতেও বহু কর্মকর্তারা রয়েছেন যুগের পর যুগ। অর্থাৎ যাদের অনিয়ম দেখার কথা তারাই মানছেন না নিয়ম।
এমন বেশ কয়েকজন শিক্ষকের নাম। যারা একই প্রতিষ্ঠানে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে অবস্থান করছেন। মাঝে দু 'একবার কয়েক মাসের জন্য ঢাকা ছাড়লেও ফিরে আসেন পুরোনো ঠিকানায়।
ঢাকা কলেজের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ জাকির হোসেন ২০০৭ সাল থেকে ঢাকা কলেজে চাকরি করেছেন। এরপর মাঝের কিছু সময় ঢাকা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে (ডিজি) কার্যালয়ে কিছু দিন কাজ করেছেন। আবার ২০১৯ সালে ফিরেছেন ঢাকা কলেজে। সরকারি বাঙলা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ মুস্তাফিজুর রহমান লিখন।২০০৭ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলা কলেজে ছিলেন। বর্তমানে এনসিটিবিতে আছেন। কবি নজরুল সরকারি কলেজের ভুগোল বিভাগের অধ্যাপক এ বি এস এ সাদি মোহাম্মদ। কবি নজরুল সরকারি কলেজে অনেক অনিয়ম ও অত্যাচার করে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন অবৈধভাবে সেক্রেটারি ছিলেন শিক্ষক পরিষদে। সমস্ত ক্রয় কমিটিতে তিনি থাকেন। একদিন হোক বা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক হন।
অন্যান্য সহকর্মীদের কোন কমিটি দেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
১৯৯৩ সাল থেকে ঢাকায় আছেন। মাঝে কিছু সময় তৎকালিন জগন্নাথ কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। এরপর থেকে একই কলেজে আছেন। সব মিলিয়ে একই কলেজে প্রায় ২৫ বছর শিক্ষকতা করছেন তিনি। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, তিনি কবি নজরুল সরকারি কলেজে উপাধ্যক্ষ হওয়ার চেস্টারত। অথচ বিএনপি জামাত জোট সরকারের আমলে তিনি সর্বোচ্চ সুবিধাজনক পদে পদায়ন নিয়ে ছিলেন।
সরকারি বাংলা কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম পলাশ। ২০০৪ চার সাল থেকে পরিদর্শণ ও নিরিক্ষা অধিদপ্তর ( ডিআইএ), ইডেন মহিলা কলেজে, ঢাকা কলেজে, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঘুরে আবারও সরকারি বাংলা কলেজে আছেন। ইডেন মহিলা কলেজের সমাজ কল্যাণ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তারি সালেহিন। ২০০৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত একই কলেজে আছেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন। ২০০৫ সালের ২ জুলাই থেকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বাংলাদেশ এক্সামিনেশন ডেভেলপমেন্ট ইউনিট (বিডু) নামের এক প্রকল্পেই চাকরি করে যাচ্ছেন, ভাসানটেক সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জেসমিন আক্তার। ২০০৫ সালের ২ জুলাই থেকে একই কলেজে আছেন। অভিযোগ রয়েছে তিনি সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী লুৎফুর জামান বাবারের নিকট আত্মীয়। মাউশির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের সহকারী পরিচালক সাবিনা বেগম। ২০০৬ সালে একই পদে চাকরি করে চলেছেন। সরকারি বাঙলা কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী আসমা সিদ্দীকা। ২০০৯ সাল থেকে একটানা একই কলেজে চাকরি করে চলেছেন। বাংলা কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহাবুবুল ইসলাম। ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ছিলেন ঢাকা কলেজে। এরপর থেকে আছেন বাঙলা কলেজে। সরকারি তিতুমীর কলেজের মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মনিরুজ্জামান। ২০১০ সাল থেকে এক টানা কাজ করছেন একই কলেজে।
এছাড়াও পদের বিপরিতে দুই থেকে তিনগুন শিক্ষককে ওএসডি হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। এমন দুটি কলেজের নাম হাতে এসেছে। তার একটি কলেজে ২৩ পদের বিপরিতে শিক্ষক আছেন ৫৯ জন আরেকটি কলেজে ২৩ পদের বিপরিতে ৬৬ শিক্ষককে পদায়ন করা হয়েছে। ঢাকার ১৯টি সরকারি কলেজে মোট পদ রয়েছে ৯২৪ জন শিক্ষকের। তার বিপরিতে ওএসডি সংযুক্তি ও ইনসিটু হয়ে অবস্থান করছেন আরও ৭১১ জন শিক্ষক। এই সকল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ছাত্রদের কোচিং করতে বাধ্য করার মতো গুরুতর অভিযোগ ও রয়েছে। এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আধিপত্য বিস্তার করা, সুযোগ মতো যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসে সেই দলের অনুসারী হয়ে নিজেদের সুবিধা বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ও আছে এই সকল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রসাশন) এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক বলেন, পাঁচ বছর ধরে আছেন এমন শিক্ষকদের তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এরপর এ বিষয়ে আর কিছু জানি না। এ বিষয়ে কলেজ শাখার দু’জন অতিরিক্ত সচিব আছেন তারা বিস্তারিত বলতে পারবেন।
শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের এমন অনৈতিক অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. তারিক আহসান বলেন, এটা বড় ধরনের অপচর্চা। এটা নিয়মিত চর্চা হওয়া প্রয়োজন। নিয়মিত বদলি হলে সকল কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের গুনগত মান বৃদ্ধি হবে। তারা দক্ষতা অর্জন করবেন এবং প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা শিক্ষকদের মান বাড়বে। সেই সঙ্গে তাদের তাদের প্রমোশন বা প্রশাসনিক উচ্চ পর্যায়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। কিন্তু নিয়মিত বদলি না হলে সেই সুযোগ স্থবির হয়ে যায়। এছাড়া দূর্নীতি, কোচিং বাণিজ্যে জড়িয়ে যায়। যদি নিয়মিত বদলি চালু থাকে এগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। তাই বদলির বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখা উচিৎ।
শিক্ষাখাতে এমন অনিয়মের বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারি নিয়ম ব্যত্যয় করে যারা সুযোগ নিচ্ছেন এবং যারা সুযোগ করে দিচ্ছেন তাদের সবাইকেই জবাদিহিতার আওতায় আনা উচিৎ। যদি এই বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তৎপর হতেন তাহলে এমন অনিয়ম হতো না। এটা সম্ভব হচ্ছে কারণ যারা নিয়ন্ত্রক আছেন তাদের মধ্যে কিছু কর্মকর্তা অনিয়মের সুযোগ করে দিচ্ছেন ফলে তারাও সুবিধা নিচ্ছেন। দুই পক্ষই লাভবান হচেছ। উভয় পক্ষকেই জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। কারণ যারা সুযোগ নিচ্ছেন ও সুযোগ দিচ্ছেন তারা উভয়েই দায়ি। আমি বলবো যারা সুযোগ দিচ্ছেন তারা সবচেয়ে বেশি দায়ি।
চট্টগ্রাম স্বন্দীপে সরকাজি হাজি এবি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কোষাধাক্ষ এসএম কামাল আহমেদ বলেন, শিক্ষা ক্যাডারে কতৃপক্ষের চেয়ে আমরা শিক্ষকরাই বড় বাধা। একবার ঢাকায় গেলে আর কোথাও যেতে চান না। বদলির বিষয়ে এই শিক্ষকরা বলেন, আমরা তো বদলি হচ্ছি। বাস্তবে তারা ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজ, ইডেনে ঘুরে ফিরে চাকরি করছেন। আবার অনেকে আছেন একই কলেজে চাকরি জীবন শেষ করেছেন। ফলে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যারা আছেন তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। তারা ট্রেনিং পাচ্ছেন না। পদোন্নতি পাচ্ছেন না। অপর দিকে সবাই ঢাকায় থাকতে চাওয়া উপজেলা পর্যায়ে কলেজগুলোতে শিক্ষকদের অভাবে পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। ফলে উপজেলার শিক্ষকরা হতাশায় ভোগেন। তারাই সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হচ্ছেন।