টানা বৃষ্টিতে খাগড়াছড়ির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত ও পাহাড় ধসের আশংকা, তৎপর প্রশাসন
প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪৮ অপরাহ্ন | জেলার খবর

মোঃ শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া আসাদ (খাগড়াছড়ি) : খাগড়াছড়িতে টানা ভারী বর্ষণে বন্যা ও পাহাড় ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত দুই দিন ধরে থেমে থেমে চলা বৃষ্টিতে চেঙ্গী ও মাইনী নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে, ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল ও পাহাড়ি পাদদেশে বসবাসকারীদের মধ্যে বাড়ছে আতঙ্ক।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দীঘিনালা উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের চিটাইগ্যাংয়া পাড়া, নিচের বাজারসহ কয়েকটি নিচু এলাকায় পানিতে তলিয়ে গেছে । ইতোমধ্যে এসব এলাকার লোকজন স্থানীয় একটি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
নদীর পানি বাড়তে থাকায় দীঘিনালা-লংগদু সড়কের হেডকোয়ার্টার এলাকায় সড়ক ডুবে গেছে। এতে রাঙামাটির লংগদুর সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ দুপুর থেকে বন্ধ রয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে মেরুং বাজার প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জেলা শহরের মুসলিম পাড়া, রাজ্যমনি পাড়া, বটতলি,গঞ্জপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন বাজার এলাকা এবং সড়কের বেশ কিছু অংশ ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে। মাটিরাঙ্গার সাপমারা এলাকায় গাছ উপড়ে পড়ে সড়ক ও বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বিপর্যয় ঘটেছে।
পৌর শহরের শালবন, কুমিল্লা টিলা, সবুজবাগসহ পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবার। পাহাড় ধসের শঙ্কায় জেলা সদরসহ তিনটি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে প্রশাসন। তবে আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজনের উপস্থিতি খুবই কম।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা বলেন, “পাহাড়ের মাটি নরম হয়ে গেছে, ধসের ঝুঁকি বাড়ছে। আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে জেলা পরিষদ আর প্রশাসনের উদ্যোগে। আমরা নিম্নাঞ্চলে বসবাসরত ও পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনা খাবার আর থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, “ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সবাইকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার অনুরোধ করছি।”
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, এখনো বড় কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের একটি মোবাইল টিম বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘুরে দেখছে এবং যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে।
এদিকে সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়কের কয়েকটি স্থানে মাটি ধসের কারণে সড়ক যোগাযোগও হুমকির মুখে পড়েছে।
জেলা সদরের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থান ও নিম্নাঞ্চলে বন্যায় কবলিত স্থান পরিদর্শন করেছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা, জেলা পরিষদের সদস্য প্রফেসর আব্দুল লতিফ, মঞ্জিলা ঝুমাসহ জেলা পরিষদের অন্যান্য সদস্যরা।