সাভার উপজেলা সিলিন্ডার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি-দেখা দিয়েছে সংকট
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৫:৫৯ অপরাহ্ন | জনদুর্ভোগ

মোঃ শামীম আহমেদ,সাভার ঢাকাঃ
সাভার উপজেলা সিলিন্ডার গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে বিপদে পরেছে সাভার,আশুলিয়ার পোশাক শ্রমিক সহ সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ।
আজ ০৩-০২ -২০২৩ দুপুরে সাভার,আশুলিয়ার কয়েকজন খুচরা ও পাইকারি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া যায়।
সাভার উপজেলা একটি শিল্পাঞ্চল অধ্যুষিত এলাকা। যার ফলে এখানে বিপুল পরিমাণ গার্মেন্টস সহ কলকারখানা রয়েছে। আর এ সকল কলকারখানায় কাজ করে লাখ লাখ শ্রমিক। যাদের অধিকাংশ শ্রমিক রান্না-বান্না করেন সিলিন্ডার গ্যাসে। অনেকের বাসায় লাইনের গ্যাস থাকলেও গ্যাসের চাপ কম থাকায় তা দিয়ে রান্না করা সম্ভব নয়। যার ফলে তারাও গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করতে বাধ্য হয়।
হঠাৎ করে সিলিন্ডার গ্যাসের সংকট দেখা দেওয়ায় বেশ সমস্যার মধ্যে পরেছে এলাকায় বেশিরভাগ মানুষ। অনেকে রান্না করতে না পেরে ছুটে যাচ্ছে হোটেলের দিকে। সব মিলিয়ে একটি বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে সাভার উপজেলার শিল্পাঞ্চলবাসী।
গ্যাস সংকটের বিষয়টি নিশ্চিত করে আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকার বাবু আহমেদ বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে প্রয়োজন অনুযায়ী গ্যাস পাচ্ছি না। ডিলাররা ঠিক মত গ্যাস দিচ্ছে না। অগ্রিম টাকা দিয়েও গ্যাস মিলছে না।
আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকার অন্য এক খুচরা ব্যবসায়ী সৈকত বলেন, গতকাল থেকে হঠাৎ করেই অতিরিক্ত দাম দিয়ে গ্যাস কিনতে হচ্ছে, যার ফলে ক্রেতাদের সাথে আমাদের তর্ক করতে হচ্ছে এবং তাদের বুঝাতে হচ্ছে। বর্তমান আমাদের বাজার থেকে পাইকারি হিসেবে ১৫৩০ টাকা দরে গ্যাস কিনে আনতে হচ্ছে। তবুও গ্যাস ঠিকমত পাচ্ছিনা। পাশের অন্য খুচরা ব্যবসায়ী আরিফ ও একই কথা বলেন।
তাসনীম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বসুন্ধরা গ্যাসের ডিলার আশরাফুল ইসলাম নজরুল বলেন, ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রির জন্য আমার প্রতিদিন ৩০০-৩৫০ টি গ্যাসের সিলিন্ডারের প্রয়োজন। কিন্তু কোম্পানি আমাকে দিচ্ছে ৫০-১০০ টি সিলিন্ডার। তাহলে প্রতিদিন ২০০ শতর অধিক গ্যাস সিলিন্ডার কম পাচ্ছি। যার ফলে ক্রেতাদের চাহিদা পূরন করতে পারছি না।
দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনশ টি সিলিন্ডার আনতে গাড়ি পাঠাই। সিলিন্ডার দেয় সর্বোচ্চ ২০০টি। যার ফলে ৩০০ সিলিন্ডারের গাড়িভাড়া ১০০ সিলিন্ডারের উপর পড়ে। তাই দাম বাড়তি নিতে হচ্ছে।
ইউরো গ্যাস বিডির ম্যানেজার মিজানুর রহমান বলেন, আমরা যমুনা, ডেলটা, বি.এম ও টোটাল এই চার কোম্পানির ডিলার। এর মধ্যে গত ২০ জানুয়ারি থেকে ডেলটা কোম্পানির সিলিন্ডার কোম্পানি থেকে সরবরাহ করছে না। আর বি.এম কোম্পানি আমাদেরকে আগে প্রতি একদিন পর একদিন ৫০০ টি করে সিলিন্ডার দিতো। কিন্তু এখন দিচ্ছে দুইদিন পর একদিন মাত্র ১০০ টি সিলিন্ডার। অন্যদিকে টোটাল গ্যাসের সিলিন্ডার পাওয়া যাচ্ছে মাঝে মধ্যে। শুধুমাত্র যমুনা গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ স্বাভাবিক আছে।
সিলিন্ডার গ্যাস সংকটের কারন জানতে চাইলে টোটাল গ্যাসের মার্কেটিং অফিসার মোহাম্মদ উল্লাহ রাজন জানান, এলসি খুলতে সমস্যা হওয়ার কারনে বিদেশ থেকে গ্যাস আমদানি করতে বিলম্ব হচ্ছে। ফলে আমরা পর্যাপ্ত পরিমানে গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ করতে পারছি না। এ সমস্যা শুধু আমাদের নয়, অনেক কোম্পানিরই এই সমস্যা।
সাভার,আশুলিয়া বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে সিলিন্ডার গ্যাসের সংকট ১২৫০ টাকার সিলিন্ডার গ্যাস হঠাৎ করে কিনতে হচ্ছে ১৬০০থেকে ১৬৫০ টাকায়। বিপাকে পরেছে সাধারণ জনগণ।