স্বপ্নের বালু নদীর ব্রিজ নির্মাণ হয়নি ২০ বছরেও
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১৩ অপরাহ্ন | জনদুর্ভোগ
দেবাশীষ সরকার, রূপগঞ্জ - নারায়নগঞ্জ
হাজারো মানুষের স্বপ্নের সেতু নির্মাণ হয়নি প্রায় ২০ বছরে ৷বার বার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ঢাকা রামপুরা ও রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া -ভুলতা সড়কের বালু নদীর ব্রিজের কাজ ৷সেতুটি নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করা হয় বিগত ২০০১ বিএনপির সরকারের আমলে ৷প্রায় ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭৫.৩০ মিটার দৈর্ঘ্য সেতুটি নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০০৩ সালে ৷ সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে এক বছরের মধ্যে সেতুর কাজ নির্মাণ করার দায়িত্ব পান মেসার্স ইস্টর্নি ট্রেডার্স লিমিটেডের |গত ২০০৪- ২০০৫ অর্থবছরে বরাদ্দ মেলে মাত্র ৫০ লক্ষ টাকা |এরপর আর কোন বরাদ্দ দেওয়া হয়নি ৷ফলে দুটি স্প্যান নির্মাণ করার পর থমকে যায় ব্রিজের কাজ ৷
সূত্র জানায়, অসমাপ্ত বালু নদীর ব্রিজের জন্য দ্বিতীয়বার দরপত্র আহবান করা হয় ৷নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৩ কোটি টাকা |সেতুটি নির্মাণের কাজ পায় দুইটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ৷কিছুদিন কাজ চললেও সেতুটি নির্মাণে বাধা দেয় বাংলাদেশ অভ্যন্তরে নৌ - পরিবহন কর্তৃপক্ষ ৷এ সময় আইডব্লিউএ কর্তৃপক্ষ বালু নদকে তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার তকমা দেখিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি (যার নং-২৬৭৯৯০০৮১৬) দেয়। এরপর থমকে যায় নতুন করে সেতুর নির্মাণকাজ। কিছুদিন পর আবার সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় কিন্তু কোন এক অজানা কারণে নির্মাণ কাজ আবার বন্ধ হয়ে যায় ৷নদীর দুই পাড়ের মানুষের সেতুর পিলার দেখেই বছরের পর বছর চলে যাচ্ছে ৷সেতুটির অভাবে ৩০ টি গ্রামের মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ৷সেতুটি নির্মাণ হলে রূপগঞ্জসহ রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠের খিলগাঁও, সবুজবাগ, ডেমরাসহ আশপাশের কয়েক লাখ মানুষের ভাগ্যের চাকা ঘুরে যাবে। খুলে যাবে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার। তৈরি হবে নতুন নতুন শিল্পকারখানা ও গার্মেন্ট শিল্প। সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানের। সেতুটি নির্মিত হলে কাঁচপুর ও সুলতানা কামাল সেতুর যানজট কমে যাবে। দেশের উত্তরাঞ্চল সিলেট, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদীসহ ১০ জেলার যানবাহন অতি সহজে ভুলতা দিয়ে কায়েতপাড়া হয়ে রাজধানী রামপুরায় প্রবেশ করতে পারবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৭৫ নং ওয়ার্ডের বালু নদীর পাড়ে ইদারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা স্বপন বলেন ছোট বেলা থেকে শুনে আসছি যে বালু নদীর উপর ব্রিজ হবে কিন্তু ব্রিজ আর নির্মাণ হয় না ৷বেঁচে থাকতে বালু নদীর উপর ব্রিজ দেখতে পারবো কি না আল্লাহ জানে ৷আমাদের দুঃখ কষ্ট বোঝার মত কেউ নেই ৷নারায়ণগঞ্জের -রূপগঞ্জের বাসিন্দারা বলছে এই ব্রিজটির জন্য আমাদের এবং আমাদের ছেলে-মেয়েদের অনেক কষ্ট করতে হয় ৷আমরা চাকরির জন্য প্রতিদিনই ঢাকা যায় আমাদের যেতে আসতে অনেক অসুবিধা হয় তাছাড়া আমাদের ছেলেমেয়েদের ঢাকার ভালো কোন কলেজে পড়ালেখা করাতে ও অসুস্থ রোগীদের ভালো কোন হসপিটালে নিয়ে যেতে হলে অনেক জায়গা ঘুরে ঢাকা যেতে হয় এতে করে অনেক টাকা ব্যয় হয় এবং সময়ের প্রয়োজন হয় অনেক ৷গর্ভবতী ও মুমূর্ষ রোগীদের ঢাকায় নিয়ে যেতে অনেক সময়ের প্রয়োজন কিন্তু ব্রিজটি নির্মাণ থাকলে আমরা অতি সহজেই ঢাকায় পৌঁছে যেতে পারবো ৷ব্রিজটির জন্য আমরাও কষ্ট করেছি আমাদের ছেলে মেয়ে ও কষ্ট করে যাচ্ছে ৷ ব্রিজটির জন্য ৩০ টি গ্রাম ও হাজারো মানুষ কষ্ট করছে ৷ নদীর দুই পাড়ের মানুষের সরকারের কাছে দাবি ব্রিজটি যেন অতি দ্রুত নির্মাণ করা হয় ৷