খুলনায় পুলিশ কর্মকর্তাকে পিটুনি, পুলিশে দিলেন বিএনপি নেতাকর্মীরা
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ১০:৫৯ পূর্বাহ্ন | পুলিশ প্রশাসন

খুলনায় সুকান্ত দাশ নামে পুলিশের এক সহকারী পরিদর্শককে (এসআই) মারধরের ঘটনা ঘটেছে। মারধরের পর তাকে পুলিশের কাছে তুলে দিয়েছেন বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা।মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে নগরীর ইস্টার্ন গেট এলাকায় তাকে মারধরের ঘটনা ঘটে। সুকান্ত দাশ সোনাডাঙ্গা থানায় কর্মরত ছিলেন। তবে গত ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে এসআই সুকান্ত দাশ সিএনজিচালিত থ্রি-হুইলারে খুলনা থেকে ফুলতলার দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে তাকে বহনকারী গাড়িটির ইস্টার্ন গেটের সামনে দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানোর সময় কয়েকজন লোক তাকে দেখে ফেলেন। এরপর ক্ষুব্ধ জনতা তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারপিট শুরু করে। পরে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে তুলে দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের আগে এসআই সুকান্ত নগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব পালনকালে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে সুকান্তের বিরুদ্ধে। এ কারণে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা তার উপর ক্ষুব্ধ ছিল।খুলনা মহানগর বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান বলেন, ফুলবাড়ী গেট এলাকায় বিএনপির একটা মানববন্ধন কর্মসূচি ছিল। কর্মসূচি শেষের দিকে নেতাকর্মীরা জানতে পারেন যে ইস্টার্ন গেটে স্থানীয় জনগণ এসআই সুকান্তকে মারধর করছে। ওখানকার মানুষজনও তার নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। সুকান্ত যেহেতু আলোচিত মানুষ, তাই খবর পেয়ে নেতাকর্মীরা সেখানে যান ও সুকান্তকে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে দেন। বিএনপি বিশ্বাস করে, কেউ অপরাধী হলে প্রচলিত আইনের মাধ্যমে তার বিচার হবে। বিএনপির কেউ তার মারধরের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন।সুকান্তের বিষয়ে মিজানুর রহমান আরও বলেন, বিগত সরকারের সময় পুলিশ লীগ নামের একটা শব্দ ছিল, বলা যায় খুলনায় পুলিশ লীগের আহ্বায়ক ছিলেন এই সুকান্ত। সুকান্তের অত্যাচার থেকে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী বাদ যাননি। মহানগর বিএনপির সভাপতির বাড়ি ড্রিল মেশিন দিয়ে ভাঙচুর করেছেন। তার ওপর খুলনার মানুষের একটা ক্ষোভ আছেই। খুলনা মহানগর পুলিশের খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, জনতা এসআই সুকান্তকে মারধর করছে, এমন খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। তখন পরিস্থিতি খুব উত্তপ্ত ছিল। তাঁরা বুঝিয়ে তাঁকে (সুকান্ত) পুলিশের হেফাজতে নিয়ে নেন। পরে চিকিৎসার জন্য তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (দক্ষিণ) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর সোনাডাঙ্গা থানায় কর্মরত এসআই সুকান্ত দাশ আর চাকরিতে যোগদান করেননি। ওই দিন থেকেই তিনি পলাতক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।