আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের কর্মবিরতি কর্মসূচির ঘোষণা
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:০৮ অপরাহ্ন | ভিন্ন খবর

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব সংশোধন করে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের প্রস্তাবসমূহ সংযোজন এবং প্রশাসন ক্যাডার কর্তৃক পক্ষপাতিত্বপূর্ণ ও বৈষম্যমূলকভাবে বিভিন্ন ক্যাডার কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ। আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক মোহাম্মদ ওমর ফারুক দেওয়ান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সারাদেশের সকল দপ্তরে অর্ধদিবস কর্মবিরতি। ঐদিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কর্মকর্তারা নিজ নিজ দপ্তরের সামনে কালো ব্যাজ পরে ব্যানারসহ অবস্থান করবেন। ২৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের দাবি পূরণে দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেয়া হলে আগামী ২ মার্চ পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালিত হবে।
আর এ সময়ের মধ্যে পক্ষপাতদুষ্ট এ আদেশ প্রত্যাহার না হলে পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগসহ অন্যান্য জরুরি সেবা প্রদান কার্যক্রম এ কর্মবিরতির আওতার বাইরে থাকবে। সেবামূলক সিভিল সার্ভিস তৈরির রূপরেখা তৈরিতে সভা, সেমিনার, গোল টেবিল বৈঠকের মত নানামুখী বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে ২৫টি ক্যাডারের সংগঠন 'আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ'। সমাজের সকল স্তরের মানুষের মতামতের ভিত্তিতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে লিখিত মতামত প্রকাশ করেছেন পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫টি ক্যাডারের নেতৃবৃন্দ।
পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা অর্থ্যাৎ ক্যাডার যার মন্ত্রণালয় তার; জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ডিএস পুলে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ১৯৭৯ সালের এসএসপি পুনর্বহাল করে মেধাভিত্তিক নিয়োগ পদ্ধতি চালু করা এবং সকল ক্যাডারের সমতা নিশ্চিত করতে সুপারিশ করেছে ২৫টি ক্যাডার। কিন্তু, প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যদের মাধ্যমে গঠিত পক্ষপাতদুষ্ট জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের উপস্থাপিত রিপোর্টে ২৫ ক্যাডারের দাবির কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। রিপোর্টে জনস্বার্থের জন্য কোনো পরিবর্তন নয় বরং একটি ক্যাডারের ক্ষমতাকে শুধুমাত্র পেশাজীবিদের উপরেই নয় বরং জনপ্রতিনিধির উপরে স্থাপন করার প্রয়াশ বলে মনে করে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ। পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে, স্বল্প সময়ের মধ্যেই এ বিষয়ে দেশবাসীকে বিস্তারিত জানানো হবে এবং সংশ্লিষ্টদেরকে লিখিতভাবে অবহিতপূর্বক ধারাবাহিক আলোচনা ও কর্মসূচি অব্যাহত রাখা হবে। বৈষম্যহীন, জনবান্ধব সিভিল সার্ভিস না হওয়া পর্যন্ত পরিষদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। অন্যদিকে, সম্প্রতি প্রশাসন ক্যাডার কর্তৃক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ, ডিসি নিয়োগের জন্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে হাতাহাতি, সমাবেশ হতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনকে আল্টিমেটাম প্রভৃতি কার্যক্রমের কারণে প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যদের সঙ্গে ২৫ ক্যাডারের সদস্যগণ সোশ্যাল মিডিয়ায় বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। সেক্ষেত্রে ফেসবুকে লেখালেখির কারণে ২৫ ক্যাডারের ১২ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই ধরনের কাজ প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরা করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বৈষম্যপূর্ণ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে প্রশাসন ক্যাডার ২৫ ক্যাডারের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বলে মনে করে পরিষদ। প্রশাসন ক্যাডার কর্তৃক এরূপ অন্যায় আগ্রাসনের বিষয়ে ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’ ও সংশ্লিষ্ট ক্যাডার অ্যাসোসিশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা, সচিবসহ বিভিন্ন পর্যায়ে অবহিত করে এই অন্যায় আদেশ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়েছিলো। প্রশাসন ক্যাডারের অন্তত ২২ জন কর্মকর্তার কুরুচিপূর্ণ লেখালেখি উপদেষ্টাদের দেখালে তারা বিস্মিত হন এবং ২৫ ক্যাডারের সাময়িক বরখাস্তের বিষয়ে সমাধানের আশ্বাস দেন। সে প্রেক্ষিতে পরিষদ আশ্বস্ত হয়ে কোনো ধরনের কর্মসূচী গ্রহণ করেনি। কিন্তু, দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি, বরং এখনো সাময়িক বরখাস্ত চলমান রয়েছে। পরিষদের পক্ষ থেকে সকলকে শান্তিপূর্ণভাবে এ কর্মসূচী পালনের আহ্বান জানানো হয়।