সামর্থবান মুসলমানদের অবশ্যই কুরবানী দিতে হবে

 প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২০, ০৯:৩৮ অপরাহ্ন   |   ধর্ম

সামর্থবান মুসলমানদের অবশ্যই কুরবানী দিতে হবে

মাওলানা এম এ করিম ইবনে মছব্বির:

আল্লাহর হুকুমে হযরত ইব্রাহিম (আ.) তার কলিজার টুকরো হযরত ইসমাইল (আ.) কে কুরবানী দিতে উদ্যত হয়ে ছিলেন। একমাত্র আল্লাহর হুকুম মানতে এবং আল্লাহকে রাজী এবং খুশি করার মানসে। কুরবানী হলো আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় মন, আত্নাকে আল্লাহর জন্য বিলিয়ে দেয়া, ইব্রাহিম (আ.) কে আল্লাহ পাক পরীক্ষা করেছিলেন, হযরত ইব্রাহিম (আ.) ও আল্লাহর সে পরীক্ষাতে কামিয়াব হয়েছিলেন। করোনাকালীন অবস্থায় সকল সামর্থবান মুসলমানদেরকে আল্লাহর নিকট তাওবা এর পাশাপাশি, পশু কুরবানীর সাথে সাথে অন্তরকেও কুরবানী দিয়ে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে হবে। এবারের করোনাকালীন কুরবানীতে ও অনেক উপকার রয়েছে, যেমন করোনাকালীন বিপর্যস্ত অর্থনীতি ও চাঙ্গা হবে, সতেজ হবে। ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি কুরবানীর দেওয়ার ফলে আরো এগিয়ে যাবে।

আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআন ঘোষণা করেন যে আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি করুন ( সুরায়ে কাওসার, আয়াত ২)।  নামাজ হলো শারীরিক ইবাদত, এবং কোরবানি আর্থিক ইবাদত সমূহের মধ্যে বিশেষ গুরুত্বের অধিকারী। কোরবানি না দিয়ে, তার টাকা গরীবদের দান করলে হবে না। দশ জিলহজ থেকে বারো জিলহজ পর্যন্ত সকল সামর্থবান, ধনীদের জন্য কুরবানী দেওয়া ওয়াজিব বা সুন্নাত। এ বিষয়ে কুরবানী না দিয়ে সে অর্থ গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দেয়ার কোন সুযোগ ইসলামি শরিয়তে নেই। তবে  যে সকল ধনী লোকেরা বিগত বছর গুলিতে একটা গরু এর বদলে দশ টা গরু কুরবানী দিছেন, তাঁরা এবারের করোনা ভাইরাস মহামারীকালীন সময়ে বেশী গরু বা ছাগল কুরবানী না দিয়ে, সেই টাকাটা গরীব অসহায়দের মাঝে দান করতে পারেন। তবে সামর্থ বানদেরকে কুরবানী দিতেই হবে। করোনা ভাইরাসকালীন সময়ে অর্থনীতির অবস্থা ও ভালো নেই, আল্লাহকে রাজী এবং খুশি করার জন্য কুরবানী দিতে হবে।

রাসুল (সা.) কে জনৈক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাছুল (সা) কুরবানী জিনিসটা কি? রাসুল (সা.) উওর দিলেন, কুরবানী হলো তোমাদের মুসলিম জাতির আদি পিতা হযরত ইব্রাহিম (আ) এর অতি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। যাদের সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা বা সমপরিমাণ নিছাবের সম্পদ আছে, তাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব। বিধায় কুরবানী এর টাকা করোনা ভাইরাসকালীন সময়ে গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দেয়ার কোন সুযোগ ইসলামি শরিয়তে নেই।

হা বিগত বছরে বেশি গরু কুরবানী দিছেন, এবারে কম দিয়ে, সে টাকা টা গরীব অসহায়দের জন্য বিলিয়ে দিতে পারেন। তবে সামর্থ বানদেরকে অবশ্যই কুরবানী দিতে হবে। আসন্ন ঈদুল আযহাতে, আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় পশু কুরবানী এর সাথে আমাদের মনকে ও মহান আললাহর নৈকট্য লাভের আশায় মনের কুরবানী দিতে হবে। আল্লাহ মানুষ এর মন দেখেন। আল্লাহ মানুষ এর নিয়ত দেখেন। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে মহামারী থেকে হিফাজত করুন, এবং সামর্থবানদেরকে কুরবানী দেওয়ার তাওফিক দান করুন, আমীন।

(লেখক মাওলানা এম এ করিম ইবনে মছবিবর, অতিথি অনুবাদক মসজিদুল হারাম কাবা শরীফ, সাবেক ইমাম ও খতীব বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ মসজিদ ।)


ধর্ম এর আরও খবর: