যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হ্রাসে ফিরে আসছে স্থগিতাদেশকৃত ক্রয়াদেশ

 প্রকাশ: ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ১১:২৯ পূর্বাহ্ন   |   জাতীয়

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হ্রাসে ফিরে আসছে স্থগিতাদেশকৃত ক্রয়াদেশ

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে আরোপিত পাল্টা শুল্কের হার হ্রাস করায় আবারও সচল হচ্ছে এক সময় স্থগিত হওয়া রপ্তানি আদেশ। এতে স্বস্তি ফিরেছে দেশের রপ্তানিকারক ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্রেতা—উভয় পক্ষেই। উদ্যোক্তারা বলছেন, যদিও সাময়িকভাবে বিক্রয়ে কিছুটা ধাক্কা লেগেছে, তবে দীর্ঘমেয়াদে এটি বাংলাদেশের রপ্তানির পরিধি ও প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হবে।

দীর্ঘ আলোচনার পর শুক্রবার (১ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক নির্ধারণ করে। এটি চীন ও ভারতের তুলনায় কম। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকদের মতে, এই শুল্কহার বাংলাদেশের জন্য মার্কিন বাজারে নতুন সুযোগের দ্বার খুলে দিয়েছে।



বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের বার্ষিক রপ্তানির পরিমাণ প্রায় ৮৪০ কোটি মার্কিন ডলার, যার মধ্যে প্রায় ৭০০ কোটি ডলারই তৈরি পোশাক খাতে। শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর পরই আগের স্থগিতাদেশকৃত ক্রয়াদেশগুলোর বিষয়ে আবারও আগ্রহ প্রকাশ করছেন মার্কিন ক্রেতারা। পোশাক রপ্তানিকারকরা আশা করছেন, আগের কোনো আদেশই বাতিল হবে না, বরং প্রতিযোগী চীন ও ভারতের বাজার হারিয়ে বাংলাদেশই হয়ে উঠবে তাদের নতুন নির্ভরযোগ্য গন্তব্য।


বাংলাদেশ গার্মেন্টস প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)–এর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, 'অন্য দেশগুলোর শুল্ক হার যদি একই থাকে, তাহলে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সম্পর্ক, প্রতিযোগিতামূলক মূল্য ও গুণগতমানের কারণে ক্রয়াদেশ চলমান থাকবে বলে আমরা আশাবাদী।'



তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সুফল দীর্ঘস্থায়ী করতে হলে কেবল শুল্ক কমানোতেই ভরসা রাখা যাবে না। এর পাশাপাশি কূটনৈতিক অর্থনীতি আরও শক্তিশালী করতে হবে। একই সঙ্গে রপ্তানির বহুমুখীকরণ, উৎপাদন দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করাও জরুরি।


অর্থনীতিবিদ ড. শাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী বলেন, 'বাংলাদেশ যে কূটনৈতিক সফলতা দেখাতে পেরেছে, সেটি ধরে রাখতে হবে। নিয়মিত ও সুপরিকল্পিত কূটনৈতিক যোগাযোগ বজায় রাখলে এই সাফল্য আরও সুদূরপ্রসারী হবে।'


বিশেষজ্ঞরা আরও মনে করছেন, রপ্তানি বাড়াতে হলে দেশের বন্দরগুলোর দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা ও সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থাপনাতেও জোর দিতে হবে, যাতে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ টিকে থাকতে পারে এবং নতুন নতুন বাজারে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়।


জাতীয় এর আরও খবর: