বাবা বাঁচাও আমাদের
প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২৪, ১০:০২ অপরাহ্ন | সারাদেশ

ইউনিভার্সেল কামাল (লালমাই) :
বাবা আমাকে নিয়ে যাও, বাবা আমাকে বাঁচাও’- বেইলি রোডে লাগা আগুনে এভাবেই চিৎকার করতে করতে মারা যান রিয়া। মালয়েশিয়ায় পড়াশুনা করতেন তিনি। আগামীকাল শনিবার (২ মার্চ) বিকেলে মালয়েশিয়া ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তার।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই নিজের মেয়ের মৃত্যুর ঘটনার বর্ণনা দেন রিয়া ও আলিশার বাবা কোরবান আলী।
কুমিল্লার লালমাই উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের চরবাড়িয়া গ্রামের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী কোরবান আলীর তিন মেয়ে নিয়ে ঢাকায় থাকেন। বড় মেয়ে রিয়া মালয়েশিয়ায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে পড়াশোনা করেন। শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।
আগামীকাল বিকেলে রিয়ার মালয়েশিয়া ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। যাওয়ার আগে ছোট বোন আলিশা ও সিটি কলেজে পড়ুয়া খালাত বোন লিমুকে নিয়ে কাচ্চি খেতে যান বেইলি রোডের 'কাচ্চি ভাই' রেস্টুরেন্টে।
খাওয়ার আগে হঠাৎ আচমকা আগুনের কুন্ডলী দেখে বাবাকে ফোন দিয়ে বলেন, ‘বাবা আমাকে নিয়ে যাও। আমাকে এখান থেকে বাঁচাও।’
কোরবান আলী বলেন, মেয়ের ফোন পেয়ে আমি পাগল হয়ে যাই। আমার দুই রত্নের খোঁজে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের মর্গে গিয়ে দেখি আমার দুই মেয়েসহ আমার পরিবারের তিন মেয়ের নিথর দেহ।
তিনি আরও বলেন, আমার মেয়েরা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। আমি এখন কী নিয়ে বাঁচব। আমার মেয়ের কেঁদে কেঁদে বলা কথাগুলো এখনো আমার কানে বাজছে। কোরবান আলীর মেয়েদের মৃত্যুতে লালমাই উপজেলার পেরুলসহ পুরো উপজেলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুল হাসান শাহীন, অর্থমন্ত্রীর পিএস কেএম সিংহ রতন ব্যবসায়ী কোরবান আলীর কণ্যার মৃত্যুতে গভীর শোক এবং সমবেদনা জানিয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত কোজি কটেজ নামের বহুতল এই ভবনে আগুন লাগে। এতে এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন আরও অন্তত ২২ জন। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্হ্য মন্ত্রী।