৩১তম বিসিএস ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের ভিন্নধর্মী ত্রাণ বিতরণের গল্প

 প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২০, ০৬:৪৮ অপরাহ্ন   |   মিডিয়া কর্নার

৩১তম বিসিএস ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের ভিন্নধর্মী ত্রাণ বিতরণের গল্প

গতকাল শনিবার রাজধানীতে পাঁচশ অসহায়, দিনমজুর, বস্তিবাসীকে ঘরে পৌঁছে দেয়া হয়েছে খাদ্য সামগ্রী। পুরো কার্যক্রমে যারা সহায়তা দিয়েছেন তাদের সঙ্গে সহায়তা পাওয়া মানুষগুলোর দেখা দেখিও দেখাও হয়নি। নিজেরা ঝুঁকিমুক্ত থাকতে এবং অন্যদের ঝুঁকিমুক্ত রাখতে এমন পদ্ধতিতে ত্রাণ দিয়েছেন ৩১তম বিসিএস ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের একদল সরকারি কর্মকর্তা। এসব কর্মকর্তা শুক্রবার ও শনিবার ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাঁশবাড়ি ও নবোদয় হাউজিং এলাকার বাচ্চু মিয়ার বস্তিতে প্রায় এক হাজারের মতো পরিবারের মাঝে ত্রাণ দিয়েছেন।

করোনার কারণে এক অর্থে লকডাউন হয়ে গেছে পুরোদেশ। ঢাকায় সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ, প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে বারণ জনসাধারণকে। অন্যদিকে দেশজুড়ে চলছে সাধারণ ছুটি। এতে সব থেকে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। তাই এই সংগঠনের পক্ষ থেকে এসব মানুষকে সহায়তা দেয়ার জন্য বেছে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এর সভাপতি আব্দুল্লাহ আল হাদী।

অন্যদের থেকে এদের ত্রাণ বিতরণের ভিন্নতা হলো তারা স্পটে যাওয়ার পর মাইকে সবাইকে বাসার ভেতরে অবস্থান করতে বলেন। গেট খোলা রেখে ভেতরে সবার অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর স্বেচ্ছাসেবকরা একে একে করে সব ঘরের গেটে খাবার সামগ্রীর প্যাকেট রেখে আসেন। যাতে সাত কেজি চাল, এত কেজি ডাল, এক কেজি তেল, অাধাকেজি লবন ও সাবান থাকে।

সব জায়গায় দেয়া শেষ হলে চলে আসার সময় মাইকে ঘোষণা দেয়া হয় এখন সবাই খাবারের প্যাকেট নিয়ে যান। এমন পদ্ধতিতে ত্রাণ দেয়ায় কেউ যেমন বঞ্চিত হচ্ছেন না তেমনি কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলাও হয় না।

এমনভাবে ত্রাণ পেয়ে বস্তির বাসিন্দা খাদিজা আক্তার বলেন, অনেকে ত্রাণ দেয় এমনকি কইরা কেউ দেয় নাই।আগে মারামারিও হইত। আইজগা স্যাররা দিলো কোনো গ্যাঞ্জাম (বিশৃঙ্খলতা) হয় নাই। আমরাও খুশি।

সংগঠনের উপদেষ্টা আহসান খান রবিন বলেন, ‘আমরা সহায়তা দিতে গিয়ে কাউকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না। কারণ করোনাভাইরাস এটা ছোঁয়াচে। তাই ঝুঁকি এড়াতে এভাবে সহায়তা করছি আমাদের সাধ্যমত। এটা চলমান থাকবে। এভাবে সহায়তা দেয়ার ফলে কেউ বঞ্চিত হচ্ছে না।

সংগঠনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, ত্রাণ নিয়ে মারামারি, বিশৃঙ্খলতা দেখা যায় প্রায়ই। আর এখন তো সংক্রামণের ঝুঁকিও রয়েছে। তাই এভাবে সবাইকে ঘরে রেখে গেটে খাবার রেখে আসছি। সবাই এমনটা করলে সবাই নিরাপদ থাকতে পারবে বলে বিশ্বাস।

সংগঠনের প্রায় দুই হাজার সদস্য নববর্ষের অর্ধেক ভাতা করোনায় এসব মানু্ষের সহায়তার জন্য দিয়েছেন। সামনে এই কার্যক্রম চলমান থাকবে বলেও জানিয়েছেন আয়োজকরা।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে পুলিশ ক্যাডারের মৃত্যুঞ্জয় দে সজল, শিক্ষা ক্যাডারের মুশফিকুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মিডিয়া কর্নার এর আরও খবর: