শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ এর পুরাতন ভবনটি সাধারণ সকল চিকিৎসার সেবার জন্য খুলে দেওয়ার দাবি

 প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২০, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ন   |   সারাদেশ

শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ এর পুরাতন ভবনটি সাধারণ সকল চিকিৎসার সেবার জন্য খুলে দেওয়ার দাবি

মেহেদী হাসান সোহেল (গাজীপুর):
ঢাকার অদূরে গাজীপুর মহানগরীর তথা আশেপাশের এলাকার প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষের চিকিৎসা সেবার অন্যতম আশার আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছিল শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে মানুষের জীবন যখন সংকটময় মুহূর্তে উপনীত। ঠিক তখন সরকার শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল ঘোষণা করে। যার ফলশ্রুতিতে অত্র হাসপাতালের নিয়মিত অন্যান্য চিকিৎসা সেবা সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হলে সাধারণ মানুষ সারাদেশের মতো চিকিৎসা সেবা নিতে ব্যর্থ হয়ে আসছে।ফলে নীরবে-নিভৃতে কেঊ কেঊ ঘরে বসে বসে ধুকে ধুকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে।আর কিছুটা স্বচ্ছল রোগী যারা প্রতিদিন নামমাত্র চিকিৎসা সেবা নিয়ে খোলা হাসপাতলে চিকিৎসা সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।সেখানে সামান্য অসুখ-বিসুখে ভুল চিকিৎসা সহ নানা হয়রানির স্বীকার হয়ে নানা রোগেরদিকে ধাবিত হচ্ছে।গাজীপুর সদর হাসপাতালকে যখন শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করা হয় তখন থেকে গাজীপুরের মানুষের মাঝে আস্থার বিশেষ একটা জায়গা দখল করে নিয়েছিল এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। সাধারণ মানুষ দিনকে দিন জেলার সর্বত্র ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ক্লিনিক ও হাসপাতাল সমূহের উপর নির্ভর করতে হয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিতে ভুগছে জেলায় বসবাস করা সাধারণ মানুষ।

বিগত রমজান মাসে গাজীপুরের বাসন থানা তেলি পাড়ার হোমিও চিকিৎসক মোহাম্মদ শাহিন বুকের ব্যথা অনুভব করলে চলে আসেন শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল টি করোনা বিশেষত হাসপাতাল হওয়ার কারণে চিকিৎসা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার মাঝপথেই মৃত্যুবরণ করেন মোহাম্মদ শাহিন। এরকম প্রায় শতাধিক উদাহরণ দেয়া যাবে যাবে করোনা বিশেষত হাসপাতাল হওয়ার পর থেকে পর্যন্ত। গত শনিবারে কাপাসিয়া রাউ ৎকোনা গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা কাপাসিয়ার একটি ক্লিনিকের ব্যবস্থাপক আব্দুস সাত্তার গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিতে ব্যর্থ হয়ে গাজীপুরের শিববাড়িতে অবস্থিত পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান চিকিৎসা নিতে। সেখানে লম্বা টেস্টের ভিড়ে তিনি ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে মধ্যরাতে ইন্তেকাল করেন। নগরীর ভুরুলিয়ায় বসবাসকারী শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিয়মিত কিডনি রোগের চিকিৎসা সাবেক বন কর্মকর্তা ফেড্রিক মুকুল বিশ্বাস।মহামারি করোনার কারনে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। কিন্তু তার যথাযথ চিকিৎসার অভাবে তিনি দিনকে দিন মৃত্যু ঝুঁকির সাথে পাল্লা দিচ্ছেন বলে জানান।সাধারণ চিকিৎসা সেবা কবে নাগাদ শুরু হতে পারে বিষয়ে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ পরিচালক তপন কান্তি সারকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে আমরা করোনা সাসপেক্টেড এবং করোনা এফেক্টেড রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে চলছি। তবে আমরা উক্ত হাস্পাতালের নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দেবার জন্যে স্বাস্থ মন্ত্রনালের আদেশের অপেক্ষায় আছি। আশা করছি আগামী ঈদুল আযহার পর উক্ত আদেশ হয়তো মন্ত্রণালয় থেকে চলে আসবে।

সমগ্র দেশে যখন চিকিৎসা সেবার নামে প্রতারণা দুর্বৃত্তায়ন ব্যাপকভাবে চলছিল ঠিক তখন সাধারণ মানুষের কাছে স্বল্পমূল্যে চিকিৎসাসেবায় বিশ্বস্ততার এবং আস্থার একটা জায়গা তৈরি করে ফেলেছিল শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। জেলার সাধারণ মানুষের এখন অন্যতম বাঁচা-মরার দাবি হিসেবে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ এর পুরাতন ভবনটি সাধারণ সকল চিকিৎসার সেবার জন্য খুলে দেওয়ার।

সারাদেশ এর আরও খবর: